ঢাকা, বুধবার ০১, মে ২০২৪ ১৯:০৫:৪৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
মহান মে দিবসে মেহনতি মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা মদিনায় ভারি বৃষ্টিতে বন্যা, রেড অ্যালার্ট জারি দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরা শুরু ভর্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ, পদ্মায় ঝাঁপ দিয়ে তরুণীর আত্মহত্যা মহান মে দিবস আজ ক্যারিয়ার সেরা র‍্যাংকিংয়ে জ্যোতি চুয়াডাঙ্গায় আজ ৪৩.৭ ডিগ্রি, ২৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা উন্নয়নের  উদ্যোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:২৯ পিএম, ৪ জুন ২০২৩ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

নতুন অর্থবছরের বাজেটে প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কোনও উদ্যোগ নেই। স্মার্ট সোসাইটি বিনির্মাণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা কাউকে পেছনে ফেলে নয়- এ অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ও সবার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতের কথা অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে তার প্রতিফলন এই বাজেটে নেই। এমনকি বাজেটে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ, জাতীয় আইন, নীতিমালা, গ্লোবাল ডিজঅ্যাবিলিটি সামিট ২০২২ এ দেওয়া সরকারের প্রতিশ্রুতি ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিফলন নেই।

রোববার (৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থান’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ কথা বলেন।

অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা বলেন, প্রতিবন্ধিতা খাতে মোট বরাদ্দ ৩ হাজার ৭১০.৩৭ কোটি টাকা, যা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের মাত্র ২.৯৪ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ০.৪১ শতাংশ। প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা অপরিবর্তিত (৮৫০ টাকা) রয়েছে যা বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় খুবই সামান্য। বিগত পাঁচ বছর ধরে উপবৃত্তির জন্য প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা (এক লাখ) অপরিবর্তিত রয়েছে, যা যৌক্তিক নয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বাজেট বরাদ্দ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক। সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের ১১৫টি খাতের মধ্যে ১০টিতে প্রতিবন্ধিতা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার আটটি সমাজকল্যাণ, একটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, একটি যৌথভাবে মহিলা ও শিশু এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধারণায় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ খুবই প্রয়োজন। 

অনুষ্ঠানের সভাপতি মহুয়া পালের সভাপতিত্বে বিভিন্ন সংগঠনের ৭০ জন প্রতিনিধি এতে অংশগ্রহণ করেন। 

সম্মেলনে ডাব্লিউডিডিএফের নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি ১১টি দাবি পুনর্বিবেচনার জন্য তুলে ধরেন। সেগুলো হলো :


১. প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জীবনযাত্রার ব্যয় সূচকের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা।

২. অতি গুরুতর মাত্রার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য কেয়ারপিডারের জন্য ভাতা কার্যক্রম চালু করা।

৩. কোভিভ-১৯ পরবর্তী পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রকল্প গ্রহণ করা।

৪. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ এবং প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ, সরকারি চাকরিতে কোটা বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বেসরকারি নিয়োগকর্তাদের উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন ধাপে কর রেয়াতের সুবিধা রাখা।

৫. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলন ও যোগাযোগ সহজ করতে প্রতিবন্ধিতার ধরন ও চাহিদা মোতাবেক মানসম্পন্ন সহায়ক উপকরণ যেমন- হইলচেয়ার, ট্রাই-সাইকেল, বিশেষায়িত স্কুটার, ওয়াকার, সাদাছড়ি (ম্যানুয়াল ও ডিজিটাল), ক্র্যাচ, হিয়ারিং এইড, বহনযোগ্য র‍্যাম্প, ম্যাগনিফায়িং গ্লাস, প্রসথেটিক অর্থোটিক (কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও অঙ্গসহায়ক উপকরণ), স্পিচ টু টেক্সট, টেক্সট টু স্পিচ, এক্সেসিবল মোবাইল অ্যাপস, ব্রেইল প্রিন্টার, কি-বোর্ড, হেড পয়েন্টার, জয়স্টিক, লার্জ প্রিন্ট ম্যাটেরিয়াল, স্ক্রিন রিডিং সফটওয়্যার ইত্যাদি) আমদানির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা রাখা। পাশাপাশি দরিদ্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিনামূল্যে এসব উপকরণ সরবরাহ করার জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা।

৬. প্রতিবন্ধীদের সঞ্চয়পত্র, এফডিআর ও ডিপিএসের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স ও সার চার্জ প্রত্যাহার করা।

৭. প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার আওতায় আনতে ও ঝরে পড়া রোধ করতে শতভাগ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় আনা।

৮. কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্যেও আলাদা উপবৃত্তি চালু করা।

৯. শিক্ষা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো ও তথ্যগত প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করাসহ শিক্ষা সহায়ক উপকরণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপযোগী করা যেমন- ব্রেইল বই,  অ্যাক্সেসিবল ই-বুক ইত্যাদি, একীভূত শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কারিকুলামে ইশারা ভাষা ও ব্রেইল পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা এবং পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপযোগী করতে বাজেট বরাদ্দ রাখা।

১০. শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের জন্য বাংলা ইশারা ভাষা ইন্সটিটিউট স্থাপনে বাজেটে বরাদ্দ রাখা, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অবকাঠামোগত ও তথ্যগত প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা।

১১. প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য উপযোগী পাওয়ার র‍্যাম্প বা ম্যানুয়াল র‍্যাম্পযুক্ত বাস আমদানি এবং তৈরি, প্রবেশগম্য আশ্রয় কেন্দ্র ও গৃহহীনদের আবাসন, সাইনেজ ব্যবহার, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল, যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি প্রবেশগম্য করা।

সম্মেলনে যৌথভাবে অংশগ্রহণ করে ডিজঅ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন, প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদ, জাতীয় তৃণমূল প্রতিবন্ধী সংস্থা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা, সীতাকুণ্ড ফেডারেশন, এসডিএসএল, টার্নিং পয়েন্ট ফাউন্ডেশন, মামা ক্যাশ ও উইমেন উইথ ডিজএ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন।